আন্তঃআঞ্চলিক পর্বের সেমিফাইনাল যেতে চাইলে জয়ের বিকল্প ছিল না বসুন্ধরা কিংসের সামনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হলো না। এএফসি কাপের তৃতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) ভারতের শক্তিশালী এটিকে মোহনবাগানের সঙ্গে ড্র করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে কিংসদের। প্রথমার্ধে সুশান্ত ত্রিপুরাকে হারানো বসুন্ধরা শুরুতে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ড্র করেছে ১-১ গোলে। এই ড্র‌'য়ে বিদায়ঘণ্টা বাজল কিংসদের।
মালদ্বীপ জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই সমানে সমানে লড়াই হয়েছে। ২৮তম মিনিটে রবিনহোর পাস থেকে বসুন্ধরাকে এগিয়ে নেন ফার্নান্দেজ। তার আগে কিংসের দুই খেলোয়াড় হলুদ কার্ডও দেখেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে লাল কার্ড পান সুশান্ত। তাকে হারিয়ে আশার আলো নিভে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল ১-০ গোল এগিয়ে থাকা অস্কার ব্রুজনের শিষ্যদের। যার প্রভাব পড়ে ম্যাচেও, ৬২তম মিনিটে উইলিয়ামসের গোলে সমতায় ফেরে ভারতের ক্লাবটি। এরপর পুরো ম্যাচে আর গোল হয়নি, যদিও আক্রমণ চলেছে দফায় দফায়। ৮৫তম মিনিটে দারুণ সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন রবিনহো। ডি বক্সের কাছ থেকে তার নেওয়া শট বারপোস্টে লেগে লক্ষ্যের বাইরে দিয়ে যায়। আশাহত হয় বাংলাদেশি ফুটবলপ্রেমীদের স্বপ্ন। এ ড্রয়ের ফলে ৩ ম্যাচে পয়েন্ট 'ডি' গ্রুপে এখন ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বসুন্ধরা। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে সবার শীর্ষে মোহন বাগান। পরের দুটি স্থানে আছে বেঙ্গালুরু এফসি ও মাজিয়া। এর আগে প্রথম ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস মাজিয়া স্পোর্টস এন্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবকে হারিয়েছিল ২-০ গোলে। যদিও মালদ্বীপ ন্যাশনাল ফুটবল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না তপু বর্মনদের। এই মাঠ ছিল মাজিয়ার চেনা। নিয়মিত ম্যাচ খেলে মালদ্বীপ জায়ান্টরা। ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে দাপটের সঙ্গে খেলে মাজিয়া। তাদের আক্রমণ সামলানোতেই ব্যস্ত কিংস গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। তবে সময়ের সঙ্গে ছন্দে ফেরে অস্কার ব্রুজোন শিষ্যরা। ২৫ মিনিটে মাজিয়ার ভুলে ম্যাচে লিড কিংসদের। স্তব্ধ মাজিয়া। ১-০ গোলের লিড নিয়ে এগিয়ে যায় বসুন্ধরার রাজারা। গোল দিয়েই যেন আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় সুফিলরা। গোছানো ফুটবল আর কৌশলে পরাহত করতে প্রানান্তকর চেষ্টা চালায়। তার ফলও পায় ৪০ মিনিটে। ব্রাজিলিয়ান রিক্রুট রবসন রবিনিয়োর গোলে লিড দ্বিগুন করেন দারুণ এক গোলে। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা ভারতের বেঙ্গালুরু এফসির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে দলটি। ওই প্রথমার্ধে দু‌'দলের লড়াইয়ে ছিল সমতা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যেন খেই হারিয়ে ফেলে বসুন্ধরা। মাঠে একচেটিয়া দাপট ছিল বেঙ্গালুরুর। তবে এদিন বসুন্ধরার জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান। এছাড়া বিশ্বনাথ ঘোষ, তপু বর্মণ ও তারিক রায়হান কাজীদের নিয়ে গড়া রক্ষণভাগও দক্ষতার সঙ্গে সুনীল ছেত্রীদের একের পর এক আক্রমণ ঝড় সামলেছেন। কিন্তু যাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন বুঁনেছিল বসুন্ধরা, সেই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার রাউল বেসেরাকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। বরং মাঝমাঠে বল দখলে না রাখতে পারায় পুরো দলকে ভুগতে হয়েছে।